'আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করছে নৌবাহিনী'
স্টাফ রিপোর্টার
আপলোড সময় :
২৬-০৬-২০২৫ ০৫:২১:৪৯ অপরাহ্ন
আপডেট সময় :
২৬-০৬-২০২৫ ০৫:২১:৪৯ অপরাহ্ন
সংবাদচিত্র : ফোকাস বাংলা নিউজ
দেশের গণ্ডি পেরিয়ে নৌবাহিনী আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করে চলেছে বলে জানিয়েছেন নৌবাহিনী প্রধান এডমিরাল এম নাজমুল হাসান।
বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) সকালে খুলনার নেভাল বার্থে দেশীয় প্রযুক্তিতে নবনির্মিত তিনটি ডাইভিং বোট পানকৌড়ি, গাংচিল এবং মাছরাঙ্গা এর কমিশনিং অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে নৌপ্রধান নতুন কমিশনিং হওয়া বোটসমূহের অধিনায়কদের নিকট কমিশনিং ফরমান তুলে দেন এবং নৌবাহিনীর রীতি অনুযায়ী আনুষ্ঠানিক ভাবে নামফলক উন্মোচন করেন।
নৌবাহিনী প্রধান বলেন, 'প্রাণপ্রিয় মাতৃভূমির স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা, অর্থনৈতিক উন্নয়ন এবং সর্বোপরি ভূরাজনৈতিক প্রয়োজনে একটি শক্তিশালী নৌবাহিনীর ভূমিকা অনস্বীকার্য। বিশাল সমুদ্র অঞ্চলের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিতকল্পে, যুদ্ধ ও শান্তিকালীন বিভিন্ন কর্মকান্ড এবং উদ্ধার অভিযানে বাংলাদেশ নৌবাহিনী গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে চলছে। ১৯৭১ সালে দেশ স্বাধীনতা লাভের পর একটি শক্তিশালী নৌবাহিনী গঠনের লক্ষ্যে অল্প কিছু অকুতোভয় নৌ সদস্যকে নিয়ে যাত্রা শুরু করা বাংলাদেশ নৌবাহিনী আজ একটি পুর্ণাঙ্গ ও ত্রিমাত্রিক নৌবাহিনীতে পরিণত হয়েছে।'
তিনি বলেন, 'বিশাল সমুদ্র এলাকার সার্বভৌমত্ব রক্ষা এবং ব্লু-ইকোনমি সংক্রান্ত কার্যক্রম সফল ভাবে বাস্তবায়নের উদ্দেশ্যে নৌবাহিনীর কর্মপরিধি ও দায়িত্ব বহুগুণে বৃদ্ধি পেয়েছে। শুধু তাই নয়, দেশের গণ্ডি পেরিয়ে নৌবাহিনী আজ আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করে চলেছে। সম্পূর্ণ দেশীয় প্রযুক্তিতে খুলনা শিপইয়ার্ডে নির্মিত তিনটি ডুবুরি জাহাজ নৌবাহিনীতে কমিশনিং করতে পেরে আমি আনন্দিত।'
নিজস্ব সক্ষমতায় বাংলাদেশ নৌবাহিনী আধুনিক যুদ্ধ জাহাজ নির্মাণ ও সরঞ্জামাদি তৈরির মাধ্যমে নৌবহরকে আরও শক্তিশালী করে তুলছে। সেই ধারাবাহিকতায় ২০২১ সালের ১০ জুন খুলনা শিপইয়ার্ডে কিল লেয়িং এর মাধ্যমে দেশীয় প্রযুক্তিতে তিনটি ডাইভিং বোট নির্মাণ কাজ শুরু হয়। নির্মাণ কাজ ও প্রয়োজনীয় টেস্ট ট্রায়াল শেষে ২০২৫ সালের ০৬ মে ডাইভিং বোটগুলো বাংলাদেশ নৌবাহিনীর নিকট হস্তান্তর করা হয়।
বাংলাদেশ নৌবাহিনীতে নবসংযোজিত ডাইভিং বোটগুলোর প্রতিটির দৈর্ঘ্য ৩৮ দশমিক ৯০ মিটার এবং প্রস্থ ৯ মিটার। বোটগুলো ঘন্টায় সর্বোচ্চ ১৫ নটিক্যাল মাইল বেগে চলতে সক্ষম। ডুবুরি কার্যক্রমের আধুনিকায়নে বোট তিনটিতে সংযুক্ত করা হয়েছে অত্যাধুনিক প্রযুক্তি। ডাইভিং কার্যক্রমে ব্যবহৃত আধুনিক সরঞ্জাম ও সেন্সরে সুসজ্জিত এই বোটগুলোর মাধ্যমে নৌবাহিনীর ডুবুরিরা আরও কার্যকর ও দক্ষতার সাথে দায়িত্ব পালনে সক্ষম হবে।
এছাড়াও, প্রতিটি বোটে রয়েছে ১২ দশমিক ৭ মি. মি. হেভি মেশিন গান, উন্নত সার্ভেইল্যান্স র্যাডার, জিপিএস, ইকো-সাউন্ডার এবং আধুনিক কন্ট্রোল সিস্টেম। কমিশনকৃত ডাইভিং বোটগুলো শান্তিকালীন সামুদ্রিক নিরাপত্তা প্রদানসহ ডাইভিং অপারেশন, উদ্ধার অভিযান পরিচালনা, স্যালভেজ অপারেশন, দুর্যোগ ও ত্রাণ তৎপরতায় অংশগ্রহণ, সমুদ্র এলাকায় আইন শৃঙ্খলা রক্ষাসহ বিভিন্ন কনস্টাবুলারি দায়িত্ব পালনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
অনুষ্ঠানে খুলনা নৌ অঞ্চলের কমান্ডার রিয়ার এডমিরাল গোলাম সাদেক, সহ সামরিক ও বেসামরিক উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তা, বীর মুক্তিযোদ্ধা, জাহাজের কর্মকর্তা, নাবিক এবং আমন্ত্রিত অতিথিরা উপস্থিত ছিলেন।
বাংলা স্কুপ/প্রতিনিধি/এসকে
প্রিন্ট করুন
কমেন্ট বক্স