ঢাকা , মঙ্গলবার, ২৪ জুন ২০২৫ , ৯ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

প্রধান উপদেষ্টা ও দুদককে টিউলিপের উকিল নোটিশ

ডেস্ক রিপোর্ট
আপলোড সময় : ২৩-০৬-২০২৫ ০৯:৩০:৫০ অপরাহ্ন
আপডেট সময় : ২৪-০৬-২০২৫ ১২:৫৮:২৯ পূর্বাহ্ন
প্রধান উপদেষ্টা ও দুদককে টিউলিপের উকিল নোটিশ ​ফাইল ছবি
যুক্তরাজ্যের সাবেক প্রতিমন্ত্রী টিউলিপ সিদ্দিক বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস এবং দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়েছেন। তিনি তাদের বিরুদ্ধে ব্রিটিশ রাজনীতিতে হস্তক্ষেপ এবং তাঁর ব্যক্তিগত সুনাম ক্ষুণ্ন করার জন্য একটি "পরিকল্পিত প্রচারণা" চালানোর অভিযোগ এনে উকিল নোটিশ পাঠিয়েছেন। স্কাই নিউজের এক প্রতিবেদনে এই চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে।

টিউলিপ সিদ্দিক নোটিশে স্পষ্টভাবে উল্লেখ করেছেন যে, ড. ইউনূস এবং দুদকের মূল উদ্দেশ্য হলো তাঁর সুনাম নষ্ট করা। এর পাশাপাশি, যুক্তরাজ্যের রাজনীতিতে হস্তক্ষেপ করা এবং বিশেষ করে তাঁর নিজের নির্বাচনী এলাকা, তাঁর রাজনৈতিক দল ও দেশসেবার কাজে বাধা সৃষ্টি করা। তিনি এই ধরনের কার্যকলাপকে "কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়" বলে অভিহিত করেছেন।

যুক্তরাজ্যভিত্তিক আইনি প্রতিষ্ঠান স্টেফেনসন হারউড এলএলপি-র মাধ্যমে এই নোটিশ পাঠানো হয়েছে। এতে টিউলিপ সিদ্দিক ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন যে, তাঁর পূর্ববর্তী কোনো চিঠির জবাব দেওয়া হয়নি, যা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সমালোচনা করার শামিল। তিনি জানিয়েছেন যে গত ১৮ মার্চ ও ১৫ এপ্রিল দুদক চেয়ারম্যান ও কমিশনারদের চিঠি পাঠানো হয়েছিল এবং ৪ জুন প্রধান উপদেষ্টা ইউনূসকে একটি চিঠি পাঠানো হয়। কিন্তু কোনো চিঠিরই জবাব মেলেনি।

স্টেফেনসন হারউড জানিয়েছে, তাদের পাঠানো চিঠিতে তারা স্পষ্ট করে বলেছিলেন যে টিউলিপ সিদ্দিক একটি "পরিকল্পিত অভিযানের শিকার", যার পেছনে প্রধান উপদেষ্টা ও দুদকের হাত রয়েছে। তারা এও দাবি করেছেন যে টিউলিপের বিরুদ্ধে ওঠা প্রতিটি অভিযোগই অসত্য।

উকিল নোটিশে ড. ইউনূসের লন্ডন সফরে টিউলিপ সিদ্দিকের সঙ্গে দেখা না করার সিদ্ধান্তের তীব্র সমালোচনা করা হয়েছে। টিউলিপ সিদ্দিক ড. ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে দুদকের অভিযোগগুলো নিয়ে আলোচনা করতে চেয়েছিলেন, কিন্তু তিনি "দুঃখজনকভাবে" সেই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেন।

বিবিসি রেডিওতে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ড. ইউনূস এই বিষয়ে একটি "আশ্চর্যজনক অবস্থান" নিয়েছিলেন। তাঁকে যখন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর সাক্ষাৎ না পাওয়া নিয়ে হতাশা এবং টিউলিপ সিদ্দিকের সঙ্গে দেখা না করার কারণ জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল, তখন তিনি বলেছিলেন যে এটি একটি আইনি প্রক্রিয়া এবং তিনি তাতে হস্তক্ষেপ করতে চান না।

স্টেফেনসন হারউড এই অবস্থানের সমালোচনা করে বলেছে যে একজন নির্বাচিত জনপ্রতিনিধির বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলার আগে প্রধান উপদেষ্টার উচিত ছিল তথ্য সঠিকভাবে যাচাই করা। তাদের মতে, যখন দুদক একটি তদন্ত চালাচ্ছে বলে দাবি করা হচ্ছে, তখন টিউলিপকে নিয়ে প্রকাশ্যে সমালোচনা করা সমীচীন নয়।

আইনি প্রতিষ্ঠানটি ড. ইউনূসের টিউলিপ সিদ্দিকের সঙ্গে দেখা না করার দুটি সম্ভাব্য কারণ উল্লেখ করেছে। প্রথমত, প্রধান উপদেষ্টা টিউলিপের বিরুদ্ধে যে অভিযোগগুলো তুলেছেন, সেগুলো মিথ্যা। 

স্টেফেনসন হারউড মনে করে, ড. ইউনূস টিউলিপের সঙ্গে বসে এই মিথ্যা অভিযোগগুলো নিয়ে খোলামেলা আলোচনার সুযোগ পেয়েছিলেন, কিন্তু তিনি সেই সুযোগ গ্রহণ না করে "দুদকের আড়ালে থাকার সিদ্ধান্ত নিলেন"। এটিকে তারা প্রস্তাব প্রত্যাখ্যানের দ্বিতীয় কারণ বলে মনে করছেন।

দুদক চেয়ারম্যান বরাবর পাঠানো এই নোটিশের একটি অনুলিপি প্রধান উপদেষ্টাকেও পাঠানো হয়েছে। টিউলিপ সিদ্দিক নোটিশে বলেছেন, "সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় এখন প্রধান উপদেষ্টা ও দুদকের এসব মিথ্যা প্রচারণা থেকে সরে দাঁড়ানোর সময় এসেছে।" 

স্টেফেনসন হারউড চূড়ান্তভাবে জানিয়েছে, "দয়া করে এখন এটা নিশ্চিত করুন, যে দুদকের তদন্ত কার্যক্রম বন্ধ হয়েছে। আমরা স্পষ্ট করে বলছি, যদি এই চিঠি এবং আমাদের আগের চিঠিগুলোর যথাযথ জবাব ৩০ জুনের মধ্যে না দেন, তবে টিউলিপ সিদ্দিক যুক্তিসঙ্গতভাবেই বিষয়টির ইতি ঘটেছে বলে ধরে নেবেন।"

বাংলাস্কুপ/ডেস্ক/এসকে


প্রিন্ট করুন
কমেন্ট বক্স


এ জাতীয় আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ