ফ্যাসিবাদের দোসরদের তালিকা করে সারাদেশে দেয়ালে দেয়ালে টানিয়ে দেবেন বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি চেয়াপারসনের উপদেষ্টা অ্যাড. সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল। শুক্রবার (২০ জুন) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে প্রশাসনে ঘাপটি মেরে থাকা ফ্যাসিবাদের দোসরদের গ্রেপ্তার করে নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করার দাবিতে আয়োজিত যুব সমাবেশে এ মন্তব্য করেন তিনি।
সরকারকে উদ্দেশ করে আলাল বলেন, একটা নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে প্রশাসনের বিভিন্ন স্তর থেকে ফ্যাসিবাদের দোসর জঞ্জালদের যদি পরিষ্কার না করেন, বঙ্গভবন-ইউনিয়ন পরিষদ, গণভবন-সিটি করপোরেশনের ওয়ার্ড পর্যন্ত সব জায়গায় ঘাপটি মেরে লুকিয়ে থাকা এই ফ্যাসিবাদের দোসরদের তালিকা প্রকাশ করে সারা বাংলাদেশে দেয়ালে দেয়ালে টানিয়ে দেব।
তিনি বলেন, কারা ফ্যাসিবাদের দোসর, কারা এখনো ঘাপটি মেরে দুর্নীতি করছেন, মানুষের অধিকার বঞ্চিত করছেন এবং যেখানে খুশি সেখানে ফ্যাসিবাদের দোসরদের পুনর্বাসন করার চেষ্টা করছেন। সুতরাং সাবধান হয়ে যান। আমাদের যাতে সেই শ্বেতপত্র প্রকাশ করতে না হয়। আমাদের যাতে সেই তালিকা দিতে না হয়। জুলাই-আগস্ট বিপ্লব পালনের সঙ্গে সঙ্গে যদি এই দাবি (ফ্যাসিবাদের দোসরদের গ্রেপ্তার করে নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত) পূরণ না হয়, তাহলে আমরা সত্যিকার অর্থে সেই তালিকা প্রকাশ করে দেব। ফ্যাসিবাদের দোসররা কোথায় এবং কোন পর্যায়ে রয়েছেন।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসকে উদ্দেশ করে বিএনপির এ নেতা বলেন, আপনাকে সহায়তা করতে বিএনপি অঙ্গীকারবদ্ধ। তার অর্থ এই নয়, যা খুশি তা করবেন। আর সবকিছু আমরা সমর্থন দিয়ে যাব!মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেন, আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত হয়ে গেছে এই সরকারের প্রশাসনের রন্ধ্রে রন্ধ্রে এখনো ফ্যাসিবাদের দোসররা দাপটের সঙ্গে রয়ে গেছে। মা-বোন, সন্তান হারিয়ে যাওয়া পরিবারগুলোকে তারা এখনো হুমকি দিচ্ছেন। গুম-খুন হওয়া পরিবারগুলোকে আইনের দ্বারস্থ হতে বাঁধা দিচ্ছেন।সরকারকে উদ্দেশ্যে করে তিনি আরও বলেন, ১০ মাস প্রায় শেষ হওয়ার পথে। আপনারা এখনো পর্যন্ত তেমন কিছু জনগণকে দেখাতে পারেননি। পদে পদে মানুষকে হতাশ করেছেন। জিনিসপত্রের দাম কমেনি, গ্যাসের সংকট অনেক বেশি হয়েছে, বিদ্যুতে লোডশেডিং বেড়েছে, পানি সরবরাহ আগের মতো সুন্দর এবং পরিচ্ছন্ন নেই। বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় আপনারা ত্রুটি করেছেন।
বিএনপি চেয়াপারসনের এ উপদেষ্টা বলেন, আজকে আমরা বারবার বলেছি, তারেক রহমান আমাদের বলেছেন— জনগণের সঙ্গে থাকুন এবং জনগণকে সঙ্গে রাখুন। আমরা জনগণের পাশে আছি বলেই নির্বাচনের কথা বলি। নির্বাচনের কথা বললেই আপনারা (উপদেষ্টা পরিষদ) গোসসা করেন। গোসসা করাটা তো ঠিক নয়। একজন নির্বাচিত প্রতিনিধির কাছে মানুষ যখন-তখন যেতে পারে। যখন-তখন সময় কৈফিয়ত চাইতে পারে। কিন্তু, আপনাদের (উপদেষ্টা পরিষদ) কাছে যাওয়ার সেই সুযোগটা নেই। যেটুকু আছে, সেখানেও মাঝখানে দেয়াল তৈরি করে রেখেছে স্বৈরাচারের দোসররা।আলাল বলেন, আমরা পরিষ্কারভাবে বলতে চাই—নির্বাচন হচ্ছে একটি গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া। একটা নতুন প্রজন্ম ২০১৪, ১৮ এবং ২৪ সালে নিজেদের অধিকার প্রদর্শন করতে পারেনি। তারা মুখিয়ে আছে একটি নিরপেক্ষ নির্বাচনে ভোট দেওয়ার জন্য। তাদের অধিকার প্রতিষ্ঠা করার জন্য মূলত আমরা নির্বাচনের কথা বলি।
বাংলাস্কুপ/প্রেতিবেদক/এনআইএন