ঢাকা , বুধবার, ১৮ জুন ২০২৫ , ৩ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

এতো মানুষ কীভাবে সরে যেতে পারে, প্রশ্ন তেহরানবাসীর

তেহরানে উদ্বেগে এক কোটি মানুষ!

ডেস্ক রিপোর্ট
আপলোড সময় : ১৭-০৬-২০২৫ ০১:২১:০৩ অপরাহ্ন
আপডেট সময় : ১৭-০৬-২০২৫ ০১:৩৪:০০ অপরাহ্ন
তেহরানে উদ্বেগে এক কোটি মানুষ! ছবি : আল জাজিরা
ইরানের রাজধানী তেহরানে রাত বাড়লেও ঘুম নেই শহরের মানুষের চোখে। উত্তেজনার নতুন মাত্রা যোগ করেছে যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে আসা সরাসরি সতর্কবার্তা। ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর পর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও তেহরান খালি করার আহ্বান জানিয়েছেন।

কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে, একসঙ্গে এক কোটি মানুষ তেহরান ছাড়বে কীভাবে? এই প্রশ্ন ছড়িয়ে পড়েছে মেসেজিং অ্যাপের গ্রুপ চ্যাটে, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ও শহরের প্রতিটি আতঙ্কগ্রস্ত মুখে। গত কয়েক দিন ধরেই তেহরান ছাড়ার চেষ্টা চালাচ্ছেন অসংখ্য মানুষ। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে- রাজধানী থেকে বের হওয়ার সড়কগুলো সম্পূর্ণ আটকে আছে। যানজট এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে সাধারণত তিন ঘণ্টার পথ পাড়ি দিতে লেগে যাচ্ছে ১৪ ঘণ্টা।

বিবিসি পার্সিয়ানের প্রতিবেদক ঘোনচে হাবিবিয়াজাদ জানান, তিনি এমন একটি পরিবারকে চেনেন, যারা তেহরান থেকে রওনা হয়ে গন্তব্যে পৌঁছেছে ১৪ ঘণ্টা পর। অথচ এই যাত্রাপথ সাধারণত তিন ঘণ্টায় শেষ হওয়ার কথা। এত সময় লাগলেও শেষ পর্যন্ত তেহরান থেকে বেরিয়ে আসতে পারায় পরিবারটি নিজেদের ‘ভাগ্যবান’ মনে করছে। পরিবারটির সদস্যদের ভাষায়, ‘ভাগ্যক্রমে’ শেষ পর্যন্ত তাঁরা তেহরান থেকে বেরিয়ে আসতে পেরেছেন।

তেহরানের বাসিন্দাদের আরও অনেকেই এমন কথা বলেছেন। তারা রাজধানী থেকে বেরিয়ে আসতে পেরে কিছুটা স্বস্তি পেয়েছেন। তবে তাদের অনেকে আবার উদ্বিগ্ন প্রিয়জনদের নিয়ে, যাঁরা এখনো তেহরান ছাড়তে পারেননি। ঘোনচে হাবিবিয়াজাদ গত রাতে তার এক বন্ধুকে জিজ্ঞেস করেছিলেন, তিনি তেহরান ছাড়তে পেরেছেন কি না। জবাবে বন্ধু বলেন, রাস্তাগুলো একদম বন্ধ। এই অবস্থায় গাড়িতে উঠে বসে থাকাটা নিছক বোকামি। ভিডিও গেম স্ট্রিমারদের গ্রুপে একজন লিখেছেন, আমি শারীরিক ও মানসিকভাবে একেবারে ভেঙে পড়েছি। চার রাত ঘুমাইনি। আরেকজন সেই গ্রুপেই প্রশ্ন ছুড়ে দেন, ১ কোটি মানুষ কি সত্যিই তেহরান থেকে সরে যেতে পারবে? তার এই প্রশ্নের কোনো উত্তর মেলেনি।

তেহরানের বাসিন্দারা জানিয়েছেন, হঠাৎ করেই প্রতিটি স্থানীয় চ্যাট গ্রুপ এখন পরিণত হয়েছে রাজনৈতিক আলোচনার কেন্দ্রস্থলে। কেউ বলছেন কোন অঞ্চল লক্ষ্যবস্তু হয়েছে, কেউ জানাচ্ছেন কারা পালিয়ে যেতে পেরেছে। সবার মনে একই শঙ্কা। পরবর্তী হামলা কোথায় হবে? কারা বাঁচবে, কারা আটকে পড়বে? শহরের মানুষ এখন দু’ভাগে বিভক্ত: যারা বের হয়ে গেছেন, আর যারা এখনো সিদ্ধান্তহীনতার মধ্যে আটকে। বস্তুত, শহর ছাড়তে পারাটাই এখন একপ্রকার ভাগ্যের ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। যারা পারেননি, তারা ভাবছেন- এই বিশাল জনসংখ্যা নিয়ে এমন একটি রাজধানী কীভাবে খালি করা সম্ভব?তেহরান শহরের একটি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর আছে বটে, কিন্তু এখন তা কার্যত অকার্যকর। সড়কপথে বের হওয়ার উপায়ও সীমিত ও ঝুঁকিপূর্ণ। শহরটির মানুষের কাছে এখন একটাই প্রশ্ন- তারা শুধু নিজেদের রক্ষা করবেন, নাকি দেশের ভবিষ্যৎ নিয়ে ভাববেন।

বাংলাস্কুপ/ডেস্ক/এনআইএন

​জরুরি ভিত্তিতে তেহরান খালি করতে বললেন ট্রাম্প


প্রিন্ট করুন
কমেন্ট বক্স


এ জাতীয় আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ