ঢাকা , রবিবার, ১৫ জুন ২০২৫ , ৩১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

অতিরিক্ত ভাড়া দিয়েই কর্মস্থলে ফিরছে মানুষ

স্টাফ রিপোর্টার
আপলোড সময় : ১৪-০৬-২০২৫ ০৩:১৪:২৫ অপরাহ্ন
আপডেট সময় : ১৪-০৬-২০২৫ ০৬:৫৭:৫৫ অপরাহ্ন
অতিরিক্ত ভাড়া দিয়েই কর্মস্থলে ফিরছে মানুষ সংবাদচিত্র: সংগৃহীত
ঈদ শেষে কর্মস্থলে ফিরতে শুরু করেছে নাড়ির টানে বাড়ি ফেরা দক্ষিণাঞ্চলের মানুষ। আর এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে যাত্রীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করছে পরিবহন সংশ্লিষ্টরা। ফলে বাধ্য হয়েই অতিরিক্ত ভাড়া দিয়ে কর্মস্থলে ফিরতে হচ্ছে যাত্রীদের। শনিবার (১৪ জুন) নগরীর কেন্দ্রীয় নথুল্লাবাদ বাস টার্মিনাল ঘুরে দেখা যায়, ঈদ আনন্দ উপভোগ করতে নানা ভোগান্তি পেরিয়ে যারা বাড়ি এসেছিলেন, ঈদ শেষে তারাই আবার লঞ্চ ও বাসে গাদাগাদি করে এখন কর্মস্থলে ফিরছেন। এসময় যাত্রীরা অভিযোগ করেন, বাস মালিকরা ৪৫০ টাকার ভাড়া এখন ৭০০ টাকা পর্যন্ত আদায় করছেন।

সাদ্দাম হোসেন নামে এক যাত্রী বলেন, বরিশাল থেকে গোল্ডেন লাইন পরিবহনে ঢাকা পর্যন্ত অন্য সময় ৫০০ টাকা টিকিট হলেও এখন ৭০০ টাকা নিয়েছে। কয়েকটি বাস কাউন্টার ঘুরে একই চিত্র দেখা গেছে। ফলে বাধ্য হয়ে বেশি ভাড়া দিয়েই যেতে হচ্ছে। আরেক যাত্রী শহীদুল বলেন, বাস কর্তৃপক্ষ অন্যান্য সময়ের তুলনায় অতিরিক্ত ভাড়া নিচ্ছে। এরমধ্যেও চলতি পথে তাদের ইচ্ছে মতো গাড়িতে অতিরিক্ত লোক ওঠায়। বরিশাল থেকে ঢাকা পুরো পথেই এমন ঘটনা ঘটে। পথে প্রশাসনের কোনো নজরদারিও চোখে পড়ে না। সুমন নামের ঢাকাগামী আরেক যাত্রী বলেন, আগে ঈদের ছুটিতে লঞ্চে বরিশাল আসা যাওয়া করা হতো। এখন পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর থেকে বাসেই আসা যাওয়া করি। এ কারণেই তিন থেকে সাড়ে তিন ঘণ্টায় ঢাকা-বরিশাল আসা যাওয়া করা যায়। কিন্তু এই সুযোগটাকে কাজে লাগিয়ে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করছে বাস সংশ্লিষ্টরা।

অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের বিষয়ে বরিশাল জেলা বাস মালিক গ্রুপের সভাপতি মোশারেফ হোসেন বলেন, অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের কোনো অভিযোগ আমরা পাইনি। যদি কেউ অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের বিষয়ে অভিযোগ দেয়, তাহলে সেই বাস কাউন্টারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তাছাড়া যাত্রীদের সুবিধার্থে বাস টার্মিনাল এলাকায় বুথ বসিয়ে দেওয়া হয়েছে। সেখানে কেউ অভিযোগ দিলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি আরও বলেন, ঈদের কয়েকদিন আগে থেকেই যাত্রীদের দুর্ভোগ লাঘব ও যানজট নিরসনে বাস মালিক গ্রুপ ও প্রশাসন নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। যার সুফল এরইমধ্যে যাত্রীরা পাচ্ছে। মাত্র তিন থেকে সাড়ে তিন ঘণ্টার মধ্যে কোনো যানজট ছাড়াই বাড়ি ফিরেছে, এখন কোনো ধরনের যানজট ছাড়াই কর্মস্থলে ফিরছে।

বিআরটিএ বরিশাল বিভাগীয় কার্যালয়ের উপ-পরিচালক জিয়াউর রহমান বলেন, সাধারণ মানুষ যেন নিরাপদে এবং ভোগান্তি ছাড়া কর্মস্থলে ফিরতে পারে তা নিশ্চিত করতে বাস টার্মিনালে ঈদের আগে থেকেই নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। অনিয়ম ত্রুটি পেলে সংশ্লিষ্ট বাসগুলোকে জরিমানার আওতায় আনা হচ্ছে। এছাড়া সড়কে যেন গাড়ি রেখে কেউ ভোগান্তি না তৈরি করে এজন্য সঠিক নির্দেশনা দেওয়া আছে। ভোগান্তিমুক্ত যাত্রার নিশ্চয়তা দিতে আমরা সর্বাত্মক চেষ্টা করছি।

এদিকে শুক্রবার রাত সাড়ে ৯টা পর্যন্ত বরিশাল নদী বন্দর থেকে ১২টি সরাসরি ও ২টি ভায়া লঞ্চসহ মোট ১৪টি লঞ্চ যাত্রী নিয়ে রাজধানী ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে গেছে বলে জানান নদী বন্দর কর্মকর্তা। প্রতিটি লঞ্চেই যাত্রীর সংখ্যা স্বfভাবিক সময়ের চেয়ে অতিরিক্ত দেখা গেছে। যাত্রীরা বলেন, ঈদের ছুটি শেষ হয়ে যাওয়ায় অতিরিক্ত যাত্রী হয়েই তাদের কর্মস্থলে ফিরতে হয়েছে।

বিআইডব্লিউটিএ বরিশাল নদী বন্দরের যুগ্ম পরিচালক (বন্দর ও পরিবহন বিভাগ) শেখ মোহাম্মদ সেলিম রেজা বলেন, বরিশাল নদী বন্দর থেকে শুক্রবার ১৪টি লঞ্চ ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে গেছে। যাত্রীদের নিরাপত্তা দিতে বন্দর কর্তৃপক্ষ সবসময় সর্বাত্মক চেষ্টা করে যাচ্ছে। লঞ্চগুলো যাতে অতিরিক্ত যাত্রী নিয়ে ছাড়তে না পারে সেজন্য জেলা প্রশাসনের ম্যাজিস্ট্রেট টিমের পাশাপাশি আমাদের সার্বিক সহায়তায় আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী দায়িত্ব পালন করছে।

বাংলাস্কুপ/প্রতিনিধি/এনআইএন
 


প্রিন্ট করুন
কমেন্ট বক্স


এ জাতীয় আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ