ঢাকা , সোমবার, ০৯ জুন ২০২৫ , ২৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সাক্ষাৎ চেয়ে ড. ইউনূসকে চিঠি দিয়েছেন টিউলিপ

ডেস্ক রিপোর্ট
আপলোড সময় : ০৮-০৬-২০২৫ ০৫:০২:১৯ অপরাহ্ন
আপডেট সময় : ০৮-০৬-২০২৫ ০৫:০২:১৯ অপরাহ্ন
সাক্ষাৎ চেয়ে ড. ইউনূসকে চিঠি দিয়েছেন টিউলিপ ফাইল ছবি

যুক্তরাজ্যের এমপি ও সাবেক মন্ত্রী টিউলিপ সিদ্দিক বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান ড. মুহাম্মদ ইউনূসের আসন্ন যুক্তরাজ্য সফরের সময় তাঁর সাক্ষাৎ চেয়ে চিঠি দিয়েছেন।

চিঠিতে তিনি নিজের বিরুদ্ধে ওঠা দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে ‘ভুল বোঝাবুঝি’ মীমাংসার কথা বলেন। ব্রিটিশ দৈনিক দ্য গার্ডিয়ান–এর এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।

টিউলিপ সিদ্দিক বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার ভাগ্নি। ২০২৪ সালের নির্বাচনে জয়ী হয়ে তিনি কিয়ার স্টারমারের নেতৃত্বাধীন সরকারের নগর উন্নয়ন ও ট্রেজারি বিষয়ক মন্ত্রী হন। ওই বছর ৫ আগস্ট শিক্ষার্থী-জনতার অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর দুর্নীতির অভিযোগে তার ও পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করে দুদক।

প্রাথমিক অনুসন্ধানে রূপপুর পারমাণবিক প্রকল্প থেকে অর্থ আত্মসাৎ এবং লন্ডনের কিংস ক্রসে উপহার হিসেবে একটি ফ্ল্যাট নেওয়ার অভিযোগ ওঠে টিউলিপের বিরুদ্ধে।

ফ্ল্যাটটি সম্পদ বিবরণীতে থাকলেও তিনি দাবি করেন, সেটি পিতামাতার কাছ থেকে উত্তরাধিকারসূত্রে পেয়েছেন। যুক্তরাজ্যের দুর্নীতি দমন সংস্থা বিষয়টি স্বীকার করলেও, সমালোচনার মুখে তাকে মন্ত্রিত্ব ছাড়তে হয়। বর্তমানে তিনি কেবল এমপি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

এমন পরিস্থিতিতে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ইউনূসকে লেখা চিঠিতে চলমান বিতর্ক নিয়ে আলোচনার সুযোগ চেয়েছেন টিউলিপ। তাই আগামী সপ্তাহে অধ্যাপক ইউনূসের লন্ডন সফরের সময় তাঁর সাক্ষাৎ চেয়েছেন টিউলিপ। লন্ডন সফরে ব্রিটিশ রাজা তৃতীয় চার্লস এবং যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারের সঙ্গে অধ্যাপক ইউনূসের সাক্ষাৎ করার কথা রয়েছে।

চিঠিতে টিউলিপ লেখেন,  ‘আমি যুক্তরাজ্যের নাগরিক। লন্ডনে জন্মেছি। এক দশক ধরে ব্রিটিশ পার্লামেন্টে লন্ডনের হ্যাম্পস্টেড ও হাইগেটের জনগণের প্রতিনিধিত্ব করছি। বাংলাদেশে আমার কোনো সম্পদ বা ব্যবসায়িক স্বার্থ নেই। বাংলাদেশের প্রতি আমার হৃদয়ের টান রয়েছে। তবে এটা সেই দেশ নয়, যেখানে আমি জন্মেছি, বসবাস করেছি বা নিজের পেশাজীবন গড়ে তুলেছি।’

তিনি অভিযোগ করেন, দুদক তার আইনজীবীদের সঙ্গে যোগাযোগ না করে একতরফাভাবে তদন্তের তথ্য গণমাধ্যমে প্রকাশ করছে এবং যে ঠিকানায় তলবি চিঠি পাঠানো হচ্ছে সেটিও সঠিক নয়।

চিঠিতে টিউলিপ যোগ করেন, ‘এই কাল্পনিক তদন্তের প্রতিটি ধাপ গণমাধ্যমে জানিয়ে দেওয়া হচ্ছে। অথচ আমার আইনি দলের সঙ্গে কোনো ধরনের আনুষ্ঠানিক যোগাযোগ করা হয়নি।’

অধ্যাপক ইউনূসের প্রতি লেখা চিঠিতে টিউলিপ সিদ্দিক আরও বলেন, ‘আমি জানি আপনি নিশ্চয়ই বোঝেন, এমন প্রতিবেদন যেন আমার নির্বাচনী এলাকার জনগণ ও আমার দেশের প্রতি গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালনে কোনো ব্যাঘাত না ঘটায়, সেটি নিশ্চিত করা কতটা জরুরি।’

টিউলিপ লিখেছেন, ‘আপনি যুক্তরাজ্য সফরে আসছেন। আমি আপনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে চাই। আমার সঙ্গে আমার আত্মীয় শেখ হাসিনার সম্পর্ক নিয়ে যে ভুল ধারণা ছড়ানো হচ্ছে, তা দূর করতে এই সাক্ষাৎ গুরুত্বপূর্ণ।’

টিউলিপের দাবি, তিনি তাঁর খালার (শেখ হাসিনা) বিরোধীদের পরিচালিত একটি ‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত কুৎসা অভিযানের’ লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়েছেন। গত মাসে বাংলাদেশে টিউলিপের বিরুদ্ধে পরোয়ানাও জারি করা হয়েছে।

বাংলাদেশে এমন কোনো পরোয়ানা বা আদালতের শুনানির বিষয়ে কিছুই জানেন না বলে দাবি করেছেন টিউলিপ। তিনি বলেন, যুক্তরাজ্য ও বাংলাদেশ ‘২ বি’ প্রত্যর্পণ চুক্তির আওতাভুক্ত দেশ হওয়ায়, যুক্তরাজ্যে কাউকে গ্রেপ্তার করতে হলে বাংলাদেশ থেকে স্পষ্ট এবং বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ দেখাতে হয়, যা মন্ত্রী বা বিচারক পর্যায়ে যাচাই করে অনুমোদন দিতে হয়।

উল্লেখ্য, রাজার আমন্ত্রণে ড. মুহাম্মদ ইউনূস ৯ জুন চার দিনের সরকারি সফরে যুক্তরাজ্যে যাচ্ছেন। এ সফরে তার রাজা চার্লস ও প্রধানমন্ত্রী স্টারমারের সঙ্গে বৈঠকের কথা রয়েছে।

বাংলা স্কুপ/ডেস্ক/এসকে


প্রিন্ট করুন
কমেন্ট বক্স


এ জাতীয় আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ