ঢাকা , শুক্রবার, ০৬ জুন ২০২৫ , ২৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

রূপ বদলেছে কামারপট্টির

স্টাফ রিপোর্টার
আপলোড সময় : ০৪-০৬-২০২৫ ০৪:২৪:১৪ অপরাহ্ন
আপডেট সময় : ০৪-০৬-২০২৫ ০৪:২৪:১৪ অপরাহ্ন
রূপ বদলেছে কামারপট্টির সংবাদচিত্র: সংগৃহীত
ঈদুল আজহার বাকি আর মাত্র কয়েকদিন। শেষ মুহূর্তে কামারপট্টি ও কর্মকারদের দোকানে দম ফেলার ফুরসত না থাকলেও এর উল্টো চিত্র রাজবাড়ীতে। অন্যান্য বছর এই সময়ে কর্মকাররা কোরবানির পশু জবাইয়ের জন্য চাপাতি, ছুরি, ছোরা, দাসহ প্রয়োজনীয় জিনিস তৈরিতে ব্যস্ত থাকলেও এবার অলস সময় পার করছেন। কাজ না থাকায় কাঁচি ও বটি ধারের কাজ করছেন অনেকে। যা অন্যান্য বছর ঈদের প্রায় ১৫ দিনে আগে বন্ধ করে দিতেন।

জেলা শহরের বড় বাজারের কামারপট্টিতে ৭টি সহ আশপাশে প্রায় ২০টি লোহার জিনিস তৈরি ও বিক্রির দোকান রয়েছে। আগে ঈদ মৌসুমে দিনে ১০-২০ হাজার টাকার পণ্য বিক্রি হলেও এবার ২-৩ হাজার টাকার বেশি হচ্ছে না। কিন্তু ঈদকে কেন্দ্র করে ব্যবসায়ীরা লোন করে মালামাল উঠিয়ে বিক্রি না হওয়ায় বিপাকে পড়েছেন। ক্রেতা নাছিম উদ্দিন ও জাহিদুল বলেন, লোহার জিনিস দিয়ে বহু বছর কাজ করা যায়। আমাদের আগের ছুরি হারিয়ে গেছে। যার কারণে ছুরি কিনতে এসেছি। তবে অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার চাপাতি ও ছুরির দাম একটু বেশি। দোকানি মাসুদ কর্মকার বলেন, প্রায় ৩৫ বছর ধরে লোহার জিনিসপত্র তৈরি করে আসছি। কিন্তু এই বছরের মতো অবস্থা কখনো হয়নি। এবার একেবারে কাজ নেই। দিনে একটা-দুইটার বেশি কাজ হচ্ছে না। এভাবে চললে সংসার চালানো সম্ভব হবে না। ঈদের মৌসুমে কাঁচি, বটির কাজ করছি। তাহলে বোঝেন অবস্থা কী?

আনন্দ কুমার কর্মকার নামে এক ব্যবসায়ী বলেন, এবার ব্যবসার অবস্থা খুব খারাপ। গতবছর যে মাল বিক্রি করেছি, এবার তার চার ভাগের একভাগও বিক্রি করতে পারছি না। অনলাইনে বার্মিজসহ বিভিন্ন কোম্পানি চকচকে চাপাতি, ছুরিসহ অন্যান্য জিনিস বিক্রি করছে। যা খুবই নিম্নমানের। কিন্তু মানুষ না বুঝে চকচকে দেখে ওগুলো কিনছে। যার কারণে আমাদের হাতে তৈরি লোহার জিনিসের মান কমে গেছে। তবে হাতে তৈরি চাপাতি ও ছুরির মান অনেক ভালো। একবার বানালে বহু বছর ব্যবহার করা যায়। তারপরও ব্যবসা নেই। গত বছর আমি একটন লোহার চাপাতি বিক্রি করেছি। কিন্তু এবার দেড়শ কেজি এনেও এখন পর্যন্ত বিক্রি করতে পারিনি। অনলাইন বা দোকানে নিম্নমানের জিনিস বিক্রি বন্ধ করা গেলে আমাদের হাতে তৈরি চাপাতি, ছুরিসহ অন্যান্য জিনিস ভালো চলবে।

আরেক ব্যবসায়ী সজল কর্মকার বলেন, আমার সাত বছরের ব্যবসা জীবনে সবচেয়ে খারাপ অবস্থা এবার। গতকাল বিক্রি করেছি ৩ হাজার, আর দুপুর পর্যন্ত বিক্রি করেছি মাত্র ৩০০ টাকার পণ্য। ঈদে বেশি বিক্রির আশায় লোন করে দোকানে মাল তুলেছি। কিন্তু এখন বিক্রি হচ্ছে না। অথচ মাল বিক্রি করে লোনের টাকা পরিশোধ করবো বলে ভেবেছিলাম। এখন কী করবো বুঝতে পারছি না।

বাংলাস্কুপ/প্রতিনিধি/এনআইএন
 


প্রিন্ট করুন
কমেন্ট বক্স


এ জাতীয় আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ