রংপুর-চট্টগ্রামকে বিচ্ছিন্ন করার হুমকি আসামের মুখ্যমন্ত্রীর
ডেস্ক রিপোর্ট
আপলোড সময় :
২৬-০৫-২০২৫ ০২:৫৮:৩৬ অপরাহ্ন
আপডেট সময় :
২৬-০৫-২০২৫ ০৩:৩১:৫৬ অপরাহ্ন
ছবি: সংগৃহীত
বাংলাদেশেরও দুইটি চিকেন নেক রয়েছে এবং দুটিই বেশি ঝুঁকিপূর্ণ বলে মন্তব্য করেছেন ভারতের আসাম রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেয়া এক পোস্টে তিনি এ বিতর্কিত মন্তব্য করেন।
বিশ্ব শর্মা দাবি করেছেন, ভারতের একটি চিকেন নেক থাকলেও বাংলাদেশের চিকেন নেক আছে দুটি। তাই যারা ভারতের চিকেন নেক করিডোর নিয়ে নিয়মিত হুমকি দেন, তারা যেন এটাও মনে রাখেন, বাংলাদেশেরও দুইটি চিকেন নেক রয়েছে এবং দুটিই আরও বেশি ঝুঁকিপূর্ণ। এমনকি রংপুর আর চট্টগ্রাম বাংলাদেশ থেকে বিচ্ছিন্ন হতে পারে বলেও উল্লেখ করেছেন তিনি।
সোমবার (২৬ মে) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি। সংবাদমাধ্যমটি বলছে, আসামের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা বাংলাদেশের উদ্দেশে ‘কড়া প্রতিক্রিয়া’ জানিয়েছেন। তিনি বলেন, যারা ভারতের ‘চিকেন নেক’ করিডোর নিয়ে বারবার হুমকি দেন, তাদের মনে রাখা উচিত—বাংলাদেশের নিজস্বও দুটি ‘চিকেন নেক’ রয়েছে, যেগুলো আরও বেশি ঝুঁকিপূর্ণ।
তিনি দাবি করেন, আমি শুধু ভৌগোলিক বাস্তবতা তুলে ধরছি, যেগুলো অনেকে ভুলে যেতে পারেন।
এক্সে-এ মানচিত্র প্রকাশ করে আসামের মুখ্যমন্ত্রী জানান, বাংলাদেশে রয়েছে দুইটি সংকীর্ণ করিডোর, যেগুলোও নিরাপত্তার দিক থেকে স্পর্শকাতর। যার প্রথমটি উত্তর বাংলাদেশ করিডোর (প্রথম ‘চিকেন নেক’)। এ করিডোরটি ৮০ কিলোমিটার দীর্ঘ। ভারতের দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা থেকে শুরু হয়ে বাংলাদেশের রংপুর বিভাগের সঙ্গে সংযুক্ত দক্ষিণ-পশ্চিম গারো হিলস পর্যন্ত বিস্তৃত।
বিশ্ব শর্মার দাবি, এ পথ বাধাগ্রস্ত হলে বাংলাদেশের রংপুর বিভাগ পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়বে।
আর দ্বিতীয় করিডোরটি (চট্টগ্রাম করিডোর বা দ্বিতীয় ‘চিকেন নেক’) আরও ছোট—মাত্র ২৮ কিলোমিটার। এটি বাংলাদেশের বাণিজ্যিক রাজধানী চট্টগ্রামকে রাজনৈতিক রাজধানী ঢাকার সঙ্গে যুক্ত করে। হিমন্তের দাবি, এ করিডোর বাংলাদেশের অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক প্রাণকেন্দ্রকে সংযুক্ত রাখে।
তিনি বলেন, ভারতের শিলিগুড়ি করিডোরকে যেমন ঝুঁকিপূর্ণ বলা হয়, ঠিক তেমনই, প্রতিবেশী দেশের ভেতরেও রয়েছে এমন সংকীর্ণ করিডোর, যা সহজেই বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়তে পারে।
মূলত ভারতের শিলিগুড়ি করিডোরকেই বলা হয় ‘চিকেন্স নেক’। এটি মাত্র ২০ কিলোমিটার প্রশস্ত এবং পশ্চিমবঙ্গের শিলিগুড়িতে অবস্থিত। এ করিডোর দিয়েই ভারতের মূল ভূখণ্ড থেকে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সাতটি রাজ্যে রেল ও সড়কপথে যোগাযোগ করা হয়। করিডোরটির উত্তরে নেপাল ও ভুটান, আর দক্ষিণে বাংলাদেশ।
হিমন্ত শর্মা বলেন, এ করিডোর এতটাই কৌশলগত গুরুত্বপূর্ণ যে এটি বিচ্ছিন্ন হলে গোটা উত্তর-পূর্ব অঞ্চল ভারতের মূল ভূখণ্ড থেকে আলাদা হয়ে যাবে। তাই তিনি চান এ করিডোর ঘিরে আরও শক্তিশালী রেল ও সড়ক অবকাঠামো গড়ে তোলা হোক এবং বিকল্প পথগুলোর সম্ভাবনাও বিবেচনায় নেয়া হোক—যদিও তা প্রকৌশলগতভাবে চ্যালেঞ্জিং হয়।
বাংলা স্কুপ/ডেস্ক/এসকে
প্রিন্ট করুন
কমেন্ট বক্স