সরকারি চাকরিতে প্রবেশে পুরুষের বয়সসীমা ৩৫ বছর ও নারীর ৩৭ বছর করার সুপারিশ এসেছে।
সম্প্রতি এই সুপারিশসহ প্রতিবেদন প্রধান উপদেষ্টার দপ্তরে জমা দেওয়া হয়েছে বলে জানান পর্যালোচনা কমিটির প্রধান আব্দুল মুয়ীদ চৌধুরী।
সোমবার (১৪ অক্টোবর) সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি  বলেছেন, “সরকারি চাকরির বয়সের ব্যাপারে আলোচনা করে এখন সরকার সিদ্ধান্ত নেবে। আজকে উপদেষ্টাদের বৈঠকে আলোচনা হতে পারে।" 
কেন এই সুপারিশ করা হয়েছে সেই ব্যাখ্যাও তিনি দিয়েছেন। আব্দুল মুয়ীদ চৌধুরী বলেন, “ মেয়েদের একটু আলাদা করে বেশি বয়স দেওয়া হয়েছে। মেয়েদের আমরা এই কারণে দিয়েছি যে, মেয়েদের ছেলেদের মতো ওই বয়সে পরীক্ষা দেওয়া সম্ভব হয় না। ফ্যামিলি অব্লিগেশন্স থাকে, বিয়ে হয়ে যায়, বাচ্চা-কাচ্চা হয়। তাই তারা যেন আসতে পারেন। এছাড়া আমাদের নারী কর্মকর্তার সংখ্যা তুলনামূলক কম। কোটা আছে, কিন্তু অতটা ফুলফিল হয় না এখনো।" 
সরকারি চাকরিতে প্রবেশের সর্বোচ্চ বয়সসীমা এখন ৩০ বছর। এটি ৩৫ করার দাবিতে  দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করে আসছেন একদল চাকরিপ্রত্যাশী। কয়েক বছর ধরেই নিয়মিত কর্মসূচি পালন হচ্ছিল চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ বছর করার দাবিতে। কিন্তু বিগত আওয়ামী লীগ সরকার সেই দাবি একাধিকবার নাকচ করে দেয়। ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে দেশে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর কয়েক দফায় কর্মসূচি পালন করেছেন তাঁরা। সম্প্রতি কয়েক শ চাকরিপ্রত্যাশী রাজধানীর শাহবাগে সমবেত হন। একপর্যায়ে তাঁরা প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনার সামনে এসে অবস্থান নেন। সেদিন তাঁদের ছত্রভঙ্গ করতে কাঁদানে গ্যাসের শেল ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে পুলিশ। এরপরও চাকরিপ্রত্যাশীরা প্রধান উপদেষ্টার বাসভবনের সামনে অবস্থান নিয়ে নিজেদের দাবি জানান। ওই দিনেই পর্যালোচনা কমিটির ঘোষণা দিয়েছিল সরকার। ৩০ সেপ্টেম্বর কমিটি গঠন করে অন্তর্র্বতী সরকার।এ কমিটির প্রধান করা হয়েছিল সাবেক সচিব আবদুল মুয়ীদ চৌধুরীকে, যিনি জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের প্রধান। কমিটির সদস্যসচিব ছিলেন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব। কমিটিতে আরো তিনজন সদস্য ছিলেন। আন্দোলনকারীদের দাবি পর্যালোচনা করে সম্প্রতি প্রতিবেদন দিয়েছে ওই কমিটি। 
পর্যালোচনা কমিটির প্রধান বলেন, “(বয়সসীমা) কোন গ্রেডের জন্য আলাদাভাবে বলা হয়নি, সার্বিকভাবে সব সরকারি চাকরির বিষয়ে বলা হয়েছে।”
অবসরের বয়সসীমার বিষয়ে মুয়ীদ বলেন, “অবসরের বিষয়ে কোনো কিছু বলা হয়নি। এখন যারা চাকরিতে ঢুকবে, তাদের অবসর নিতে অনেক সময় লাগবে- এ বিষয়ে পরে সরকার চিন্তা করবে।
“যারা এখন চাকরিতে আছে, তারাই আগামী ৭/৮ বছরে অবসরে যাবে। তারা আগের নিয়মেই অবসরে যাবে।”
এদিন জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের প্রথম বৈঠক হয়েছে জানিয়ে কমিশন প্রধান মুয়ীদ চৌধুরী বলেন, “প্রশাসনের সংস্কারের বিষয়ে প্রথম বৈঠক ছিল। পরিচিতি পর্ব হয়েছে। সার্বিক বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।
“তিন মাসের মধ্যে প্রতিবেদন দেওয়ার কথা। দুই মাস পর একটা কাঠামোতে আসবে বলে মনে করি।"

বাংলা স্কুপ/এইচ বাশার/এসকে