মাদারীপুরে দুই কোটি টাকার ইলিশ বিক্রি
আপলোড সময় :
১৩-১০-২০২৪ ০৭:১৯:৪৮ অপরাহ্ন
আপডেট সময় :
১৩-১০-২০২৪ ০৭:২১:১১ অপরাহ্ন
সংবাদচিত্র : ফোকাস বাংলা নিউজ
মাদারীপুরে ইলিশ মাছের মেলা বসেছিল জেলার বড় বড় বাজারে। শনিবার (১২ অক্টোবর) রাত ১২টা পর্যন্ত প্রায় দুই কোটি টাকার মাছ বিক্রি হয় বলে জানিয়েছেন আড়তদার ও ব্যবসায়ীরা। শনিবার সন্ধ্যার পর থেকে গভীর রাতের কয়েক ঘণ্টা ইলিশ মাছ বেচা-কেনা হয়েছে। জেলা শহরের পুরানবাজার মাছের আড়ৎ, মস্তফাপুর মৎস্য ভাণ্ডার ও রাজৈর উপজেলার টেকেরহাট বন্দরে ইলিশ বেচার মহোৎসব হয়। আগামী ২২ দিন ইলিশ কেনা-বেচা ও বাজারজাত বন্ধ থাকায় এমনটি হয়েছে বলে দাবি মাছ ব্যবসায়ীদের। তাই ক্রেতা-বিক্রেতাদের পদচারণায় এসব মাছের আড়তে ইলিশ মেলায় কেনার ধুম পড়ে যায়।
জানা গেছে, শনিবার সন্ধ্যার পর থেকে মাদারীপুর প্রধান বাণিজ্যিক কেন্দ্র পুরানবাজার মাছের আড়তগুলোতে ইলিশ মাছ মাছ বিক্রির হাক-ডাক শুরু হয়। এতে ব্যবসায়ীরা নানা সাইজের ইলিশ নিয়ে পসরা সাজিয়ে বসেন। এ খবর লোকমুখে ছড়িয়ে পড়লে ক্রেতারাও হুমড়ি খেয়ে পড়েন। পুরুষের পাশাপাশি নারীদের ভিড় জমে যায় ইলিশ মেলায়। রাত গভীর হলে পুরো মাছের আড়ত ও বাজারে তিল ধরনের ঠাঁই ছিলো না। তবে গত বছরের তুলনায় এবছর ইলিশের দাম বেশি বলে জানিয়েছেন ক্রেতারা।
পুরানবাজারে মাছ কিনতে আসা মাসুদ আকন্দ বলেন, ‘২২ দিন ইলিশ মাছ পাওয়া যাবে না। তাই এখন মাছ কিনতে এসেছি। তবে গতবার এক কেজি সাইজের ইলিশ ছিল ১২শ’ থেকে ১৪শ’ টাকা, এবার সেই ইলিশ ১৯শ’ টাকার উপরে। যে কারণে মাত্র ৫ কেজি ইলিশ কিনছি। না হলে আরো বেশি কিনতাম। দাম আকাশচুম্বি।’
আরেক ক্রেতা আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘আগে জানলে এ রাতের জন্যে দেরি করতাম না। এখন যে দামে ইলিশ কিনলাম, তা আগের চেয়ে আরো বেশি। মানুষ হুজুগে মাছ কিনতে হুমড়ি খেয়ে পড়েছে। আমিও আসছি, এখন দাম দেখে আর কিনলাম না। আগামীতে আর এই ভুল করবো না।’
এছাড়া এবছর ইলিশের সরবরাহও তুলনামূলক কম ছিল। যে কারণে বেশি দাম হাঁকিয়েছে আড়তদার ও ব্যবসায়ীরা। একই চিত্র রাজৈর উপজেলার টেকেরহাট বন্দর ও রাজৈর বেপারীপাড়া মোড় ও মস্তফাপুর মৎস্য ভাণ্ডারে। সেখানেও শত শত মণ ইলিশ বিক্রি হয়েছে। তবে দাম নিয়ে বিক্রেতাদের রয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। এবছর পুরো মেলায় দুই কোটি টাকার উপরে বিক্রি হয়েছে বলেও ব্যবসায়ীদের অভিমত।
পুরানবাজারের ইলিশ মাছ ব্যবসায়ী সুজন বর্মন জানান, ‘মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযান শনিবার রাত ১২টা থেকে ব্যস্তবায়ন করা হবে। তাই যত ইলিশ সংগ্রহে ছিল সবই বিক্রি করে দিচ্ছি। কারণ মাছ মজুতও রাখা যাবে না। ক্রেতারাও আসছে, আমরাও বিক্রি করছি। তবে দাম গতবারের চেয়ে এবার একটু বেশি। যে কারণে ক্রেতাদের সাথে ঝামেলাও হয়।’
মাদারীপুর পুরানবাজার মাছ ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মোছলেম উদ্দিন বলেন, ‘প্রতি বছর নিষিদ্ধ সময়ের আগের রাতে ইলিশ মাছ বিক্রির ধুম পড়ে। সব মাছ ব্যবসায়ী সন্ধ্যা থেকে রাত ১২টার আগ পর্যন্ত ইলিশ বিক্রি করে। এ আড়তে প্রায় এক থেকে দেড় কোটি টাকার ইলিশ বিক্রি হয়। আর টেকেরহাটেও প্রায় এক কোটি টাকা ইলিশ বিক্রি হয়। তবে আমরা সংরক্ষিত সময়ে কোনো ইলিশ কেনাবেচা করি না।’
মাদারীপুর জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. হাদিউজ্জামান সাংবাদিকদের বলেন, ‘এবছর ১৩ অক্টোবর থেকে ৩ নভেম্বর পর্যন্ত ইলিশের প্রধান প্রজনন মৌসুম। তাই সারাদেশের মতো মাদারীপুরেও ইলিশ আহরণ, পরিবহন, মজুদ, বাজারজাতকরণ, ক্রয়-বিক্রয় ও বিনিময় বন্ধ থাকবে। যদি কেউ এই আইন অমান্য করে তাহলে জেল-জরিমানা করার বিধান রয়েছে।’
বাংলা স্কুপ/শফিক স্বপন/প্রতিনিধি/মাদারীপুর/এসকে
প্রিন্ট করুন
কমেন্ট বক্স