ঢাকা , শুক্রবার, ১৬ মে ২০২৫ , ১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

​​ব্রিটিশ রাজকীয় দলিল ম্যাগনা কার্টার সন্ধান পেল হার্ভার্ড

ডেস্ক রিপোর্ট
আপলোড সময় : ১৫-০৫-২০২৫ ০৩:৪৭:৩১ অপরাহ্ন
আপডেট সময় : ১৫-০৫-২০২৫ ০৩:৪৭:৩১ অপরাহ্ন
​​ব্রিটিশ রাজকীয় দলিল ম্যাগনা কার্টার সন্ধান পেল হার্ভার্ড ​ছবি: সংগৃহীত
হার্ভার্ড ল স্কুল লাইব্রেরির এক নিভৃত কোণে ‘অনানুষ্ঠানিক কপি’ হিসেবে সংরক্ষিত একটি ম্যাগনা কার্টা নথি যে আদতে ইতিহাসের অমূল্য এক মূল কপি—এমন বিস্ময়কর তথ্য সামনে এনেছেন দুই ব্রিটিশ ইতিহাসবিদ। কিংস কলেজ লন্ডনের মধ্যযুগীয় ইতিহাসের অধ্যাপক ডেভিড কার্পেন্টার এবং পূর্ব অ্যাংলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক নিকোলাস ভিনসেন্টের যৌথ গবেষণায় উঠে এসেছে, ‘HLS MS 172’ নামে পরিচিত এই নথিটি ১৩০০ সালে ইংল্যান্ডের রাজা এডওয়ার্ড প্রথম কর্তৃক জারি করা মাত্র সাতটি মূল কপির একটি।

অধ্যাপক কার্পেন্টার প্রথমে হার্ভার্ডের অনলাইন সংগ্রহ ঘেঁটে নথিটির স্ক্যান করা সংস্করণে চোখ রাখেন। তাতেই সন্দেহ জাগে—এটি কি শুধুই অনুলিপি? তার ভাষায়, “আমি স্ক্রিনেই বুঝে যাই, এটা কোনো সাধারণ কপি নয়, মূল ম্যাগনা কার্টার একটি হতেই পারে।” এরপর অতিবেগুনী আলো ও স্পেকট্রাল ইমেজিং প্রযুক্তি ব্যবহার করে দেখা যায়, নথির ভাষা, বানান, এমনকি ‘EDWARDUS’ শব্দে ব্যবহৃত বড় হাতের D অক্ষরও ১৩০০ সালের অন্য প্রামাণিক কপির সঙ্গে হুবহু মিলে যায়।

ম্যাগনা কার্টা ইতিহাসে এক মহা সন্ধিক্ষণের নাম। প্রথম জারি হয় ১২১৫ সালে রাজা জন-এর শাসনামলে। ব্রিটিশ আইনের ভিত্তিভূমি এই দলিলে রাজাকে প্রথমবারের মতো আইনের অধীন করা হয়। এতে বলা হয়, কোনো শাসক আইন লঙ্ঘন করে ইচ্ছেমতো শাস্তি দিতে পারবেন না; তাকে ন্যায়বিচারের পথেই চলতে হবে।

গবেষকদের মতে, হার্ভার্ডে থাকা নথিটি ১৩০০ সালে ইংল্যান্ডের কামব্রিয়ার অ্যাপলবাই শহরে রাজা কর্তৃক জারি করা হয়েছিল। পরে এটি ইংল্যান্ডের লোথার পরিবার, দাসপ্রথা-বিরোধী আন্দোলনের অগ্রপথিক টমাস ক্লার্কসন, এবং প্রথম ও দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পাইলট ফরস্টার মেনার্ডের হাতে হাতে ঘুরে অবশেষে ১৯৪৬ সালে মাত্র ২৭.৫০ ডলারে হার্ভার্ডের হাতে আসে—যেখানে তখন এটিকে ভুলভাবে ‘অনানুষ্ঠানিক অনুলিপি’ হিসেবে শ্রেণিবদ্ধ করা হয়।

হার্ভার্ড ল স্কুল লাইব্রেরির সহকারী ডিন আমান্ডা ওয়াটসন বলেন, “এই আবিষ্কার প্রমাণ করে, গুরুত্বপূর্ণ ইতিহাস কখনও কখনও আমাদের চোখের সামনেই থাকে—আমরা শুধু সেটাকে চিনে উঠতে পারি না। এই ম্যাগনা কার্টার মতো।”

এই অনন্য দলিলটির মূল্য বর্তমানে কোটি ডলার ছাড়িয়ে যেতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। কিন্তু এর আর্থিক মূল্য যাই হোক না কেন, আইনি ইতিহাসে এর মূল্য নিঃসন্দেহে অমিত। এই আবিষ্কার আবারও প্রমাণ করল—ইতিহাসের অনেক অধ্যায় এখনও উন্মোচিত হওয়া বাকি।

বাংলাস্কুপ/ডেস্ক/এসকে


প্রিন্ট করুন
কমেন্ট বক্স


এ জাতীয় আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ