ঢাকা , বুধবার, ০৭ মে ২০২৫ , ২৩ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

​'জুলাই ঐক্য'

আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে ঢাবি থেকে নতুন জোটের আত্মপ্রকাশ

স্টাফ রিপোর্টার
আপলোড সময় : ০৬-০৫-২০২৫ ০৮:৪৬:৪০ অপরাহ্ন
আপডেট সময় : ০৬-০৫-২০২৫ ০৯:৪২:৪১ অপরাহ্ন
আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে ঢাবি থেকে নতুন জোটের আত্মপ্রকাশ ​সংবাদচিত্র : ফোকাস বাংলা নিউজ
গণহত্যার দায়ে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে 'জুলাই স্পিরিট' ধারণকারী বিভিন্ন মতাদর্শের সামাজিক ও রাজনৈতিক সংগঠনসমূহ নিয়ে আজ 'জুলাই ঐক্য' নামে আনুষ্ঠানিকভাবে একটি ঐক্যবদ্ধ জাতীয় জোটের আত্মপ্রকাশ ঘটেছে। মঙ্গলবার (৬ মে) বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) মধুর ক্যান্টিনে সামনে এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এই জোটের আত্মপ্রকাশ ঘটে।

জোটটির অন্যতম উদ্যোক্তা ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এবি জুবায়ের বলেন, জুলাই অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে দীর্ঘ ১৬ বছরের অপ শাসনের অবসান হয়েছে। আমরা আশায় বুক পেতে ছিলাম নতুন বাংলাদেশে কোন বৈষম্য থাকবে না, আমরা পরিবর্তন দেখতে পারবো।

কিন্তু আমরা দেখতে পাচ্ছি এতো বড় অভ্যুত্থানের পর‌ও আমরা কাঙ্ক্ষিত পরিবর্তন দেখতে পারিনি। জুলাই অভ্যুত্থানের যে দল আমাদের উপর গণহত্যা চালিয়েছে আমরা এখনো তাদের বিচারের আওতায় আনতে পারিনি। তাদের মধ্যে অনেকেই দেখি প্রকাশ্যে মিছিল করছে । অথচ আমাদের আহত ভাইয়েরা হাসপাতালে কাতরাচ্ছেন।

এবি জুবায়ের বলেন, আমরা শুরু থেকেই দাবি জানিয়েছি যারা আমাদের উপর গণহত্যা চালিয়েছিল তাদের বিচারের আওতায় আনতে হবে । দল হিসেবে তাদের নিষিদ্ধ করতে হবে। কিন্তু আমরা কোনো দৃশ্যমান পদক্ষেপ দেখতে পাচ্ছি না।

তিনি আরো বলেন, আজকে এখানে বিভিন্ন মতাদর্শের  সংগঠনের লোক আছি । আমরা শুধু থেকে আমাদের দাবি জানিয়েছি স্বতন্ত্রভাবে।  কিন্তু এখন থেকে আমরা আমাদের দাবি আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে একসাথে কাজ করবো। আমরা একসাথে লড়াই করে গণহত্যার বিচার করে ছাড়বো।

লিখিত বক্তব্যে জোটটির অন্যতম উদ্যোক্তা ও ঢাবি শিক্ষার্থী মুসাদ্দিক আলী ইবনে মোহাম্মদ বলেন, বিগত সাড়ে ১৫ বছরের দমন-পীড়ন, দুর্নীতি, লুটপাট ও গণতন্ত্র হরণের বিরুদ্ধে বিক্ষুব্ধ জনতার অভূতপূর্ব এক জাগরণে সংগঠিত হয় ছাত্র জনতার জুলাই গণ-অভ্যুত্থান। এই অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ছাত্র, শ্রমিক, শিক্ষক, চিকিৎসক ও সাধারণ জনগণ সম্মিলিতভাবে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের দাবিতে রাস্তায় নেমে আসে। এই গণ-অভ্যুত্থানে জীবন দিতে হয় দুই হাজারের বেশী মানুষকে।

‘‘কিন্তু জুলাই বিপ্লবের ৮ মাস পেরিয়ে গেলেও আমরা দেখছি গণহত্যার সাথে জড়িতদের বিচারপ্রক্রিয়া এখনো অনিশ্চিত। সব থেকে বড় উদ্বেগের বিষয় এই যে বিভিন্ন রাজনৈতিক ও বেসরকারি মহলের কিছু অংশ আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসনের পাঁয়তারা চালাচ্ছে। এই বাস্তবতা উপলব্ধি করেই, আমরা বিভিন্ন মতাদর্শের সামাজিক ও রাজনৈতিক সংগঠনসমূহ নিয়ে আজ 'জুলাই ঐক্য' নামে আনুষ্ঠানিকভাবে একটি ঐক্যবদ্ধ জাতীয় জোটের ঘোষণা করছি।’’

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, এই জোটের মূল ও একমাত্র দাবি হচ্ছে জুলাই বিপ্লবে অংশগ্রহণকারীদের সাংবিধানিক নিরাপত্তা নিশ্চিত, ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের সকল রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ ও ২০২৪ এর গণহত্যা, শাপলা ট্র্যাজেডি, পিলখানা ট্র্যাজেডি, গুম, খুন, দুর্নীতিসহ বিগত সাড়ে ১৫ বছরে যে সকল অপকর্ম সংঘটিত হয়েছে তার সাথে জড়িত সকলের বিচার প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করতে প্রয়োজনীয় ক্যাম্পেইন জারি রাখা। এই লক্ষ্যকে সামনে রেখে জুলাই বিপ্লবের স্পিরিট ধারণকারী সকল শক্তিকে নিয়ে একতাবদ্ধ ভাবে কাজ করবে আমাদের এই জোট।

এবি জুবায়ের বলেন, এখন পর্যন্ত ৩৭টির মতো সংগঠন এতে ঐক্যমতো পোষণ করেন। পর্যায়ক্রমে সকল রাজনৈতিক দলগুলোও এখানে ঐক্যমত পোষণ করবে বলে আশা করছি। প্রত্যেকটা রাজনৈতিক সংগঠনের কাছে আমার যাবো আমাদের জোটের ক্যাম্পেইন হিসেবে। 

উল্লেখ্য, ইউনাইটেড পিপলস বাংলাদেশ, ইনকিলাব মঞ্চ, বিপ্লবী ছাত্র পরিষদ‌ , আর্থ বাংলাদেশ,জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি সহ এখন পর্যন্ত ৩৭টি সংগঠনের প্রতিনিধি দল এই জোটের সাথে ঐকমত পোষণ করেছে।

বাংলা স্কুপ/প্রতিবেদক/এসকে


প্রিন্ট করুন
কমেন্ট বক্স


এ জাতীয় আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ