ঢাকা , শুক্রবার, ০২ মে ২০২৫ , ১৮ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

​অবশেষে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ইউক্রেনের খনিজ চুক্তি স্বাক্ষর

ডেস্ক রিপোর্ট
আপলোড সময় : ০১-০৫-২০২৫ ০৫:৪০:৪৮ অপরাহ্ন
আপডেট সময় : ০১-০৫-২০২৫ ০৫:৪০:৪৮ অপরাহ্ন
​অবশেষে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ইউক্রেনের খনিজ চুক্তি স্বাক্ষর ​ছবি: সংগৃহীত
চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে হোয়াইট হাউসে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির মধ্যে বহুল আকাঙ্ক্ষিত বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সে বৈঠকে শান্তিপূর্ণ আলোচনার বদলে উভয়ের মধ্যে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময়ে হয়। এতে ভেস্তে গিয়েছিল দুই দেশের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ চুক্তি স্বাক্ষর। তবে পোপের মৃত্যু আবারও ট্রাম্প ও জেলেনস্কিকে কাছাকাছি করে দেয়।
 
সম্প্রতি ভ্যাটিকান সিটিতে পোপ ফ্রান্সিসের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার ফাঁকে মাত্র ১৫ মিনিটের আলোচনায় জেলেনস্কি ট্রাম্পের কাছে সহায়তার জন্য অনেক অনুরোধ করেন বলে জানিয়েছে গণমাধ্যম দ্যা ইকোনোমিস্ট।
 
সে বৈঠকের কয়েকদিনের মধ্যেই, কিয়েভ ও ওয়াশিংটনের মধ্যে স্বাক্ষরিত হলো যুগান্তকারী খনিজ চুক্তি। বুধবার (৩০ এপ্রিল) ওয়াশিংটন ডিসিতে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউক্রেনের অর্থমন্ত্রীরা এ চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছেন।
 
দুই দেশের মধ্যে স্বাক্ষরিত এ চুক্তির আওতায় একটি যৌথ তহবিল গঠিত হবে। ইউক্রেনের অর্থমন্ত্রী ইউলিয়া স্বিরিদেনকো জানান, তহবিল থেকে প্রাপ্ত আয় সমানভাবে ভাগ হবে, তবে ভূগর্ভস্থ সম্পদের মালিকানা ইউক্রেনের হাতে থাকবে। আর নতুন খনিজ লাইসেন্স থেকে আসা আয়ের অর্ধেক যাবে এ ফান্ডে।

তবে এ চুক্তি সাক্ষরের আগ মুহূর্তে কিয়েভের প্রতিনিধিরা চুক্তিতে পরিবর্তন আনার চেষ্টা করেন। তারা জানান, তহবিল সম্পর্কিত মূল চুক্তি সই করতে হলে দেশটির পার্লামেন্টে তা অনুমোদন পেতে হবে। আর সে অনুমোদন ছাড়া স্বাক্ষর সম্ভব নয়।
 
এতে ক্ষুব্ধ হন মার্কিন কর্মকর্তারা। এ নিয়ে ট্রাম্পের সঙ্গে মন্ত্রিসভার বৈঠকে কথা বলেন মার্কিন অর্থমন্ত্রী। এ সময় ট্রাম্প জানান, যুক্তরাষ্ট্রের চেয়ে ইউক্রেনের এ চুক্তির বাস্তবায়ন হওয়া বেশি প্রয়োজন।
 
মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, আমি কোনো জটিল চুক্তি করতে চাইনি। এমন কিছু করতে চাইনি যা আদৌ সম্ভব না কারণ ইউক্রেন এখন খুব কঠিন সময় পার করছে, অবস্থা খুবই খারাপ। আমি স্কটকে দায়িত্ব দিয়েছি, আর স্কট এটা চমৎকারভাবে সামলেছেন।

তবে এ চুক্তির পর কিয়েভ-মস্কোর মধ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠিত না হলে ইউক্রেনে মার্কিন সামরিক সহায়তা আবারও চালু হবে কি না তা নিয়ে কিছু স্পষ্ট করা হয়নি। মঙ্গলবার মার্কিন প্রেসিডেন্টকে এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি জানান, এ বিষয়টি তিনি আপাতত গোপন রাখতে চান।

রাশিয়া ২০২২ সালে ইউক্রেনে হামলা চালানোর পর থেকে যুক্তরাষ্ট্র দেশটির সবচেয়ে বড় সামরিক সহায়তাকারী। জার্মানির কিয়েল ইনস্টিটিউটের হিসাবে, যুক্তরাষ্ট্র এরই মধ্যে ৭ হাজার ২০০ কোটি ডলারের বেশি সহায়তা দিয়েছে।

চুক্তি স্বাক্ষরের আগে ট্রাম্প বলেন, ইউক্রেনকে সহায়তার বিনিময়ে যুক্তরাষ্ট্রের কিছু পাওয়া উচিত। সে কারণে ইউক্রেনের দুর্লভ খনিজের ওপর অধিকার নিশ্চিত করতে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এসব খনিজ বৈদ্যুতিক যান, ইলেকট্রনিক্স ও সামরিক সরঞ্জামে ব্যবহৃত হবে।

বর্তমানে বিরল খনিজ খাতে চীনের আধিপত্য রয়েছে। ট্রাম্পের শুল্ক নীতির কারণে দেশটির সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বিরোধ চলছে। ফলে বিরল খনিজের নতুন ও নির্ভরযোগ্য উৎস হিসেবে ইউক্রেন হতে পারে ট্রাম্প প্রশাসনের চমৎকার বিকল্প।

ইউক্রেনের প্রাকৃতিক সম্পদের মধ্যে বিরল খনিজ ছাড়াও রয়েছে বিপুল পরিমাণ লোহা, ইউরেনিয়াম ও প্রাকৃতিক গ্যাস।

স্বিরিদেনকো দাবি করেন, চুক্তি হলেও ইউক্রেন নিজেই ঠিক করবে কোন খনিজ কোথায় উত্তোলন হবে এবং এসব ভূসম্পদের মালিকানা ইউক্রেনেরই থাকবে।

তিনি আরও জানান, এই চুক্তির অধীনে ইউক্রেনের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের কাছে কোনও ঋণ পরিশোধের দায় থাকবে না। এটি ছিল দুই দেশের দীর্ঘ আলোচনার অন্যতম বড় বিষয়। এই চুক্তি ইউক্রেনের সংবিধানের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নে যোগদানের প্রচেষ্টাকে সহায়তা করবে।

সূত্র : দ্যা ইকোনোমিস্ট, রয়টার্স

বাংলাস্কুপ/ডেস্ক/এসকে


প্রিন্ট করুন
কমেন্ট বক্স


এ জাতীয় আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ