ভয়াবহ দাবানলে জ্বলছে ইসরায়েল, সহায়তার প্রস্তাব ফিলিস্তিনের
ডেস্ক রিপোর্ট
আপলোড সময় :
০১-০৫-২০২৫ ১২:৪১:৪৭ অপরাহ্ন
আপডেট সময় :
০১-০৫-২০২৫ ০৩:০২:০৮ অপরাহ্ন
ছবি: সংগৃহীত
দাউ দাউ করে জ্বলছে আগুন। পালাচ্ছে স্থানীয় বাসিন্দারা। ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু সতর্ক করে বলেছেন, জেরুজালেমের কাছে দ্রুত ছড়িয়ে পড়া দাবানল শহরটিতেও পৌঁছাতে পারে। তিনি জাতীয় জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছেন। আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে আন্তর্জাতিক সহায়তার আবেদন জানিয়েছে দেশটি। ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ সহায়তার প্রস্তাব দিয়েছে।
বুধবার (৩০ এপ্রিল) জেরুজালেমের কাছে মহাসড়কের উপরে ঘন ধোঁয়া উড়তে দেখা যায়। দমকলকর্মীরা দাবানল নিয়ন্ত্রণে ছুটে গেলে সুবিধা করতে পারেনি। যার ফলে বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। হাসপাতালেও জায়গা সংকট। সেনা মোতায়েন করেও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা যাচ্ছে না।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানায়, জেরুজালেমের উপকণ্ঠে অবস্থিত এশতাওল বনে বিশাল আকারের দাবানলের সূত্রপাত হয়। এক সপ্তাহের ব্যবধানে এটি দ্বিতীয় দাবানল।
ইসরায়েলের ম্যাগেন ডেভিড অ্যাডম (এমডিএ) উদ্ধার সংস্থা জানিয়েছে, কয়েক বছরের মধ্যে ভয়াবহ দাবানলের ঝুঁকিতে শত শত বেসামরিক নাগরিক রয়েছেন।
এমডিএ জানিয়েছে, তারা প্রায় ২৩ জনকে চিকিৎসা প্রদান করেছে। যাদের মধ্যে ১৩ জনকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। যাদের বেশিরভাগই ধোঁয়ায় শ্বাসকষ্ট এবং পুড়ে যাওয়ার কারণে ভুগছেন। তাদের মধ্যে দুজন গর্ভবতী নারী এবং এক বছরের কম বয়সী দুটি শিশু রয়েছে।
মোদিইন শহরের কাছাকাছি থেকে পাহাড়ের ধারে আগুন জ্বলতে থাকা অবস্থায় স্থানীয় বাসিন্দা ৪০ বছর বয়সী যুবাল আহারোনি বলেন, এটা খুবই দুঃখজনক। কারণ, আমরা আবহাওয়া জানতাম, আমরা জানতাম যে এটি ঘটবে। তবুও আমাদের মনে হয়, প্রচুর পরিমাণে পানি ফেলতে পারে এমন বড় বিমানগুলো যথেষ্ট প্রস্তুত ছিল না।
নেতানিয়াহু সতর্ক করে দিয়েছেন, পশ্চিমা বাতাস আগুনকে সহজেই [জেরুজালেমের] উপকণ্ঠে ঠেলে দিতে পারে। এমনকি শহরের দিকেও।
তিনি বলেন, আমাদের যতটা সম্ভব দমকল বাহিনী নিয়ে আসতে হবে। বর্তমান অগ্নিনির্বাপণ লাইনের বাইরেও আগুন নেভানোর ব্যবস্থা করতে হবে। আমরা এখন কেবল স্থানীয় জরুরি অবস্থার মধ্যে নেই। এখন অগ্রাধিকার জেরুজালেমকে রক্ষা করা।
কর্মকর্তারা এ দাবানলকে ইসরায়েলের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় প্রাকৃতিক অগ্নিকাণ্ড বলে উল্লেখ করেছেন। জেরুজালেমের ফায়ার অ্যান্ড রেসকিউ বিভাগের বিভাগীয় কমান্ডার সুমিলিক ফ্রিডম্যান বলেন, আমরা একটি বিশাল দাবানলের মুখোমুখি হয়েছি। সম্ভবত এটি ইসরায়েলের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় আগুন। এটি নিয়ন্ত্রণে আনতে আমাদের প্রচেষ্টা আরও দীর্ঘ সময় ধরে চলবে।
আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে হিমশিম খাচ্ছেন ইসরায়েলি কর্মকর্তারা। ইতোমধ্যে কয়েকটি দেশের কাছে সহায়তা চাওয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু জানান, ইতালি ও ক্রোয়েশিয়া তিনটি অগ্নিনির্বাপক বিমান পাঠানোর আশ্বাস দিয়েছে। অচিরেই সেগুলো ইসরায়েলে পৌঁছাবে বলে আশা করা হচ্ছে।
এছাড়া, গ্রিস, সাইপ্রাস ও বুলগেরিয়ার কাছেও সহায়তা চাওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে ইসরায়েলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
ইসরায়েলি গণমাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী, ১২০টি অগ্নিনির্বাপক ও উদ্ধারকারী দল দাবানল নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে। সেনাবাহিনী জানিয়েছে, তাদের অনুসন্ধান ও উদ্ধার ইউনিটও অভিযানে সহায়তা করছে।
পুলিশ জানিয়েছে, তিনটি সম্প্রদায়ের বাসিন্দাদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেয়া হয়েছে। দাবানলে কমপক্ষে ১৩ জন আহত হয়েছেন।
টাইমস অব ইসরায়েলকে একটি নিরাপত্তা সূত্র জানিয়েছে, জেরুজালেমে আগুন নেভাতে সহযোগিতার প্রস্তাব দিয়েছে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ। তারা অগ্নিনির্বাপক দল পাঠাতে চায়। তবে এখনো ইসরায়েল এ প্রস্তাবে আনুষ্ঠানিক সাড়া দেয়নি। অতীতেও বড় আগুন নিয়ন্ত্রণে ফিলিস্তিনি অগ্নিনির্বাপক দলগুলো ইসরায়েলকে সহায়তা করেছে।
সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান, রয়টার্স
বাংলাস্কুপ/ডেস্ক/এসকে
প্রিন্ট করুন
কমেন্ট বক্স